বিরোধী শুন্য মঙ্গলকোট ফাস্ট ক্লাস ভোট কেস্ট বাহিনীর



মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

চতুর্থ  দফা নির্বাচনে যে আটটি আসনে ভোটপর্ব মিটলো, তাদের মধ্যে বোলপুর লোকসভার অধীনে কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট ও আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকা এবং বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের অধীনে থাকা কাটোয়া, কালনা, পূর্বস্থলী উত্তর, পূর্বস্থলী দক্ষীন বিধানসভা এলাকায় ভোট মোটামুটি শান্তিতেই মিটলো। সেইসাথে বর্ধমান পশ্চিম ( দুর্গাপুর)  কেন্দ্রের অধীনে মন্তেশ্বর বিধানসভা এলাকায় বড় ধরনের কোন গন্ডগোলের খবর মিলেনি। হানাহানি না ঘটায় শাসকদল সহ বিরোধীদলগুলিও একপ্রকার খুশি বলা যায়।তবে এই ভোটে নীরব সন্ত্রাস টি সুসংগঠিতভাবে ঘটেছে বলে অভিযোগ। কোন কোন ক্ষেত্রে ছাপ্পা, ইভিএম মেশিন খারাপের খবর মিলেছে। আবার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি প্রার্থী কে মারধর সহ গাড়ী ভাঙচুর করার। শাসক শিবিরের পক্ষে অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। সোমবার সকালে  বোলপুর আসনের অধিনে থাকা   কেতুগ্রামের খাঁজি বিদ্যালয়ে ১০৪ এবং ১০৭ নং বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সামনেই ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগ উঠে প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠার সাথেসাথেই নির্বাচন কমিশন অবশ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।   উক্ত দুটি বুথে নুতন প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ করে নির্বাচন কমিশন  । এদিন কালনা শহরে যোগীপাড়ায় বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী পরেশচন্দ্র দাসের উপর হামলার অভিযোগ উঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গাড়ী ভাঙচুর এর পাশাপাশি প্রার্থী কেও মারধর করা হয়েছে। প্রার্থীর হাতে চোট লেগেছে বলে জানা গেছে   । কালনা থানায় এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে। যদিও তৃনমূল সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মঙ্গলকোটের চকগ্রামে, বনকাপাসিতে ইভিএম মেশিন বিকল হয় ভোটপর্বের সূচনাতেই। ভোট দিতে আসা ব্যক্তিরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। ভাতারে দশের বেশি বুথে ইভিএম বিকল দেখা যায়। পূর্বস্থলীর পাটুলির (ছাব্বিশ নং বুথে)  তেও একই অবস্থা। ঘন্টা খানেক পরে অবশ্য সচল ইভিএম দেওয়া হয় বুথগুলিতে। অপরদিকে মঙ্গলকোটের মাঝীগ্রামে বকুলিয়ার ১৩২ নং বুথে ইভিএমে তৃণমূল  প্রতীকে আতর দেওয়ার অভিযোগ উঠে ভোটকর্মীদের ম্যানেজ করে । এমনকি ভোট দেওয়ার পর বুথের দুশো মিটারের মধ্যে থাকা শতাধিক শাসকদলের  লোকজন সেই ভোটারের হাতের আঙুলের ঘ্রাণ নিয়ে ভোট তাদের পক্ষে দিয়েছে কিনা তাও পরীক্ষা নীরিক্ষা চালায় বলে অভিযোগ। মঙ্গলকোটের কামালপুরে বাইশটি পরিবার কে ভোটগ্রহণের আগের দিন ভোট না দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সেইসাথে মঙ্গলকোটের গোতিস্টা, চৈতন্যপুর  প্রভৃতি গ্রামের বুথগুলিতে স্বনির্ভর গ্রুপের মহিলাদের মহিলা ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে বিরোধী দলগুলির পক্ষে। তবে সমস্ত  অভিযোগ অস্বীকার করে তৃনমূলের ব্লক নেতৃত্ব জানিয়েছেন - "রক্তপাতহীন ভোট  হয়েছে,  বিরোধীরা শতকরা আশিভাগ বুথে এজেন্ট বসাতেই পারিনি। যদি বলতো তাহলে আমাদের লোক জোগাড় করে দিতাম!" গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মঙ্গলকোট বিরোধীশুন্য হয়েছিল। তাই এবার লোকসভায় মন খুলে ভোট দেবে বলে আশাও করেছিল বেশিরভাগ ভোটার। সেই আশাতেও জল ঢালে শাসক দলের স্থানীয় নেতারা। ভোটের দশদিন আগে লোকদেখানো দুই থেকে তিনবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা রুটমার্চ করলেও, নির্ভয়ে ভোটদানের সেইরুপ আশা জোগাতে পারেনি। জানা গেছে, মঙ্গলকোটের চৈতন্যপুর, গোতিস্টা, পালিগ্রাম, মাঝীগ্রাম প্রভৃতি গ্রামের বুথে গত রবিবার দুপুরের মধ্যে ভোটকর্মী সহ দুই জন গড়ে জওয়ান ঢুকে যান। স্বনির্ভর গ্রুপের মহিলাদের হাতের তৈরি খাবার তৃণমূলের স্থানীয়  বুথ কর্মীরা ভোটকর্মীদের হাতে দেয়। সেইসব সিগারেট - খৈনি সহ নানান খাবার পৌঁছে দেয় বলে অভিযোগ। সেটিং ফিটিংস করে যতদুর ম্যানেজ করতে হয় করেছে তারা। যারা প্রতিবাদী ভোটকর্মী তাদের কে তাদের স্ত্রীর সিঁথির সিঁদুরের কথা তুলে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভোটকর্মী জানিয়েছেন। তাই তো মঙ্গলকোটের মাঝীগ্রামে বকুলিয়ার ১৩২ নং বুথে ইভিএম মেশিনে তৃনমূল প্রতীকে আতর দেওয়া কিংবা মঙ্গলকোটে প্রায় বুথে খাবার সাপ্লাইকারী স্বনির্ভর গ্রুপের মহিলাদের শাসকদের হয়ে ভোট করানোর অভিযোগ উঠেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আবার শাসকদলের সারাদিনের দায়িত্বে থাকা তিন বুথএজেন্টদের একসাথে ভোট লুটে বিশেষ সক্রিয়তা চোখে পড়েছে। জানা গেছে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ তুলে লিখিতভাবে জানিয়েছে বিজেপি শিবির।                                                                                                                                                                          

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

স্বরুপনগরের ২৬ কিমি সড়কপথ সংস্কার হল

পাথরচাপরির দাতাবাবার টানে....

কোতলপুরে নেতাজির জন্মদিনে আসছেন ব্রাত্য বসু