এবার প্রকাশিত সংবাদ যাচাই করতে ওয়েব পোর্টাল কে নোটিশ পূর্বস্থলী পুলিশের,পাল্টা লিগ্যাল নোটিশ পোর্টাল কর্তপক্ষেরও
এবার প্রকাশিত সংবাদ যাচাই করতে ওয়েব পোর্টাল কে নোটিশ পূর্বস্থলী পুলিশের, পাল্টা লিগ্যাল নোটিশ পোর্টাল কর্তৃপক্ষেরও
নিজস্ব প্রতিবেদক; ভারতীয় গনতন্ত্রে চতুর্থ স্তম্ভ হিসাবে সংবাদমাধ্যম পড়ে। আর এই সংবাদমাধ্যম মূলত তিনপ্রকার হলেও চলতি সময়ে পোর্টাল নিউজ সংবাদমাধ্যমের আরেকটি রুপে এসেছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজ্যসরকারের সাংবাদিকদের পেনশন সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে ( তারিখ ২৯/০৩/২০১৮, নাম্বার ১২১৯/ডিআই/আইসিএ /এন) ২ নাম্বার সিরিয়ালে 'এ' বিভাগে পরিস্কার উল্লেখ রয়েছে যে - সাংবাদিক হিসাবে ওয়েব পোর্টাল সাংবাদিকেরাও পড়ছে। অপরদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঠিত 'প্রেস কাউন্সিল ' আছে সংবাদ সম্পকিত অভিযোগগুলি পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নিতে। সাধারণত কোন সংবাদমাধ্যমে কোন খবর নিয়ে কারও অসন্তোষ, অভিযোগ থাকলে সেই সংবাদমাধ্যম কে লিখিতভাবে অভিযোগ জানাতে হয় সংবাদটি সংশোধন করার জন্য। এতে কোন কিছু না হলে আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ পাঠাতে হয় নিদিস্ট সময়সীমা উল্লেখ করে। কেননা প্রকাশিত কোন খবর নিয়ে পুলিশ কিংবা নিম্ন আদালত কোন মামলা সরাসরি গ্রহন করতে পারেনা। উল্লেখ্য গত ৩০/১০/০৬ তারিখে হাইকোর্টে সৌমিত্র পালের এজলাসে ( সিরিয়াল নাম্বার ৫৭, রিট নাম্বার ডাবলু পি ২১০৩৭১) গুসকারা নিবাসী জীবরাজ প্যাটেল নামে এক ব্যবসায়ী স্থানীয় এক পাক্ষিক পত্রিকায় প্রকাশিত খবর নিয়ে রিট পিটিশন করেছিলেন।সেখানে উক্ত পাক্ষিক পত্রিকার পাশাপাশি রাইটার্সের হোম বিভাগ, পুলিশসুপার ( বর্ধমান), জেলাশাসক (বর্ধমান) এবং আইসি ( আউসগ্রাম) দের কে পক্ষ করা হয়। বিচারপতি এই রিট মামলা খারিজ করার আদেশনামায় উল্লেখ রাখেন যে - ' সংবাদ বিষয় অভিযোগটি নিদিষ্ট ফোরামে অনুমোদন আগে দরকার '। অর্থাৎ প্রেস কাউন্সিলের অনুমোদন। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে এক ওয়েব পোর্টাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ কে লিখিত প্রতিবাদপত্র না পাঠিয়ে, আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ না দিয়ে সরাসরি প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে বিচারকের ভুমিকায় অবতীর্ণ হল পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী থানার পুলিশ। হ্যা সেই নরকঙ্কাল, গাঁজা পাচারের মুক্তাঙ্গন পূর্বস্থলী থানা এলাকা । গত ৩০/০৮/১৮ তারিখে রুজু করা (পিএস কেস নাম্বার ৩১৯/১৮) মামলায় চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে নোটিশ পাঠানো হল অভিযুক্ত মিডিয়া হাউসের সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বাড়ীর ঠিকানায়। পুলিশের এহেন অতি সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ৫০৫ (২) ধারায় মামলার নোটিশে তিনদিনের মধ্যে থানায় হাজিরার তলব হল। 'মঙ্গলকোট ডটকম' নামে ওই ওয়েব পোর্টাল এহেন থানার নোটিশের প্রত্যুত্তরে আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট থানার আইসি, তদন্তকারী পুলিশ অফিসার সহ পূর্ব বর্ধমানের পুলিশসুপারকেও। কেননা প্রকাশিত খবরে একাংশ যেমন খুশি হয়, ঠিক অপরাংশ অখুশি বা অসন্তোষ হয়। তাহলে খবরে অসন্তুষ্ট ব্যক্তিরা থানার মাধ্যমে এইরুপ নোটিশ মিডিয়া হাউসদের পাঠাতে লাগলে। সেইসাথে থানায় খবর নিয়ে বিচারকের ভুমিকায় পুলিশ বারবার হস্তক্ষেপ করলে নির্ভীক সাংবাদিকতা করাটা দুস্কর হয়ে উঠবে বলে মানে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। কোন খবর নিয়ে অভিযোগ থাকলে মিডিয়া হাউস কে লিখিত প্রতিবাদপত্র, আইনজীবীর লিগ্যাল নোটিশ সর্বপরি প্রেস কাউন্সিল কে জানানো। তা না করে সরাসরি পুর্বস্থলী থানার পুলিশ কিভাবে সংবাদ কেন্দ্রিক মামলা রুজু করলো? এই প্রশ্ন নিয়ে লিগ্যাল নোটিশ টি পাঠানো হয়েছে মিডিয়ার তরফে। পরবর্তী দশদিনে কোন সন্তোষজনক প্রতুত্তর না এলে হাইকোর্টে পুলিশের এহেন সংবাদমাধ্যমে বে আইনি হস্তক্ষেপ নিয়ে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন ওই ওয়েব পোর্টাল নিউজের সম্পাদক মোল্লা জসিমউদ্দিন মহাশয়।পাশাপাশি রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী সহ বিভিন্ন প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষদের লিখিতভাবে জানিয়ে সুবিচারের চাইবে ওই ওয়েব পোর্টাল মিডিয়া । উল্লেখ্য পূর্ব বর্ধমান জেলায় অপরাধের অবাধ মুক্তাঞ্চল হিসাবে পরিচিত পূর্বস্থলী। নরকঙ্কাল থেকে গাঁজা পাচারের নিরাপদ করিডর বিষয়ক নানান তথ্য সমৃদ্ধ সংবাদ ওই পোর্টাল নিউজে নিয়মিত প্রকাশিত হয়েছে। এই অপরাধ মূলক যোগসাজশে স্থানীয় পুলিশের ভুমিকা নিয়েও বিস্তর প্রশ্নচিহ্ন দেখা গেছে। ২০০৮ সালে পুলিশেরই এক কনস্টেবল কে এইবিধ নানান অভিযোগে তৎকালীন পুলিশসুপার আসানসোল পুলিশ লাইনে বদলি পর্যন্ত করেছিলেন অভিযুক্ত পুলিশকর্মী কে। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, পুলিশের একাংশ তাদের অপদার্থতার জন্য মানসিক নির্যাতন - হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এই মামলাটি রুজু করেছে।