মঙ্গলকোটে কুমুদ সাহিত্য মেলা জমজমাট হলো

জ্যোতিপ্রকাশ মুখার্জি
  
         আজ(৩/৩) কবি, সাহিত্যিক, বাচিক ও সঙ্গীত শিল্পী, কৃষি গবেষক, অধ্যক্ষ, ডাক্তার, সমাজসেবী, সাংবাদিক সহ সমাজের সর্বস্তরের  সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে 'বাড়ি আমার ভাঙ্গন ধরা অজয় নদীর তীরে'-র অমর স্রষ্টা কুমুদ রঞ্জন মল্লিকের জন্মভিটে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের কোগ্রামে পালিত হলো কবির ১৩৮ তম জন্মদিন। নিছক কবিকে স্মরণ করা বা কবিতা পাঠ নয় আজকের অনুষ্ঠান বিভিন্ন দিক দিয়ে স্মরণীয়। সাহিত্য সংগঠন 'মনন' এর পক্ষ থেকে ১৫০  জন দুস্থকে বস্ত্র দেওয়া হয় এবং তাদের অন্নভোগের ব্যবস্থা করা হয়।সমাজসেবী সংগঠন 'সুসম্পর্ক' এর পক্ষ থেকে ১০০ জন ক্ষুদে পড়ুয়ার হাতে শিক্ষাসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।'ড: আর.এন.ঘোষ মেমোরিয়াল সোসাইটি'-র পক্ষ থেকে দুই জন কৃতি পড়ুয়াকে আর্থিক সাহায্য করা হয়।'উদার আকাশ' পত্রিকার পক্ষ থেকে তিন জন সাংবাদিককে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
        এর আগে উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এবং সাধারণ মানুষ কবির প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে কবিকে শ্রদ্ধা জানান। 'কুমুদ মেলা কমিটি'-র পক্ষ থেকে আমন্ত্রিত বিশিষ্টদের উত্তরীয় পড়িয়ে বরণ করা হয়।
       আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন 'সাহিত্য একাডেমি' পুরষ্কার প্রাপ্ত 'পাণ্ডব গোয়েন্দা' খ্যাত ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়, বিদ্রোহী কবির বংশধর তথা বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী সোনালী কাজী, বিখ্যাত কার্ডিলজিস্ট ড: হরিদাস মণ্ডল,কৃষি গবেষক তন্ময় ঘোষ,চিত্র পরিচালক রাজকুমার দাস সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি। এছাড়া কলকাতা থেকে প্রকাশিত  ষান্মাষিক সাহিত্য পত্রিকা 'পদার্পণ' এর পক্ষ থেকে বেশ কয়েকজন কবি তথা বাচিক শিল্পী উপস্থিত ছিলেন। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন পাক্ষিক  'কামদূঘা' পত্রিকার সম্পাদক তথা বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ধনঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়।
       কলকাতা থেকে আগত শর্মিষ্ঠা মাজি, মিনু প্রধানরা বললেন - এতদিন   সাহিত্য মেলায় কেবল  কবি-সাহিত্যিকদেরই সংবর্ধনা জানাতে দেখেছি। এই প্রথম সাহিত্য জগতের বাইরে সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্টদের সংবর্ধনা দিতে দেখলাম।এরজন্য তারা মেলা কমিটিকে ধন্যবাদ জানান। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন কৃষি বিজ্ঞানী তন্ময় ঘোষ এই সাহিত্য মেলায় উপস্থিত থাকার সুযোগ দেওয়ার জন্য কুমুদ মেলা কমিটির কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।অন্যদিকে হুগলির আরামবাগের বিশিষ্ট শিল্পপতি আগামী বছর এই মেলায় দুস্থদের ১০০ টি তাঁতবস্ত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
      প্রায় ২০ বছর আগে কবিকে সম্মান জানানর জন্য কবির জন্মদিনটি বেছে নেন বিশিষ্ট কবি-সাংবাদিক শ্যামলাল মকদমপুরী। মুর্শীদাবাদের সালার থেকে এসে তার পক্ষে কবির জন্মদিন পালন করা ছিল বেশ কষ্টকর।ফলে তিনি অনুজ কবি-সাংবাদিক মোল্লা জসিমউদ্দিনের হাতে দায়িত্ব অর্পণ করেন।গত দশ বছর ধরে 'কুমুদ সাহিত্য মেলা কমিটি'-র প্রাণপুরুষ মোল্লা জসিমউদ্দিনের উদ্যোগে এই সাহিত্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে চলেছে। প্রসঙ্গত আজ শ্যামলাল বাবুর স্বরচিত গানের মধ্যে দিয়ে  কবির স্মরণ সভা শুরু হয়।
       জসিম বাবু বললেন- কুমুদ সাহিত্য মেলা কমিটির ডাকে সাড়া দিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যেভাবে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এই সাহিত্য মেলায় উপস্থিত হয়েছেন তাতে তিনি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আশা করেন দক্ষিণ বঙ্গের বৃহত্তম সাহিত্য মেলাকে আরও সফল ও অর্থবহ করে তুলতে বহু মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

স্বরুপনগরের ২৬ কিমি সড়কপথ সংস্কার হল

পাথরচাপরির দাতাবাবার টানে....

কোতলপুরে নেতাজির জন্মদিনে আসছেন ব্রাত্য বসু