মোহনপুর কেন্দুলি মেলা হলো সাঁতুডি ব্লকে

জ্যোতিপ্রকাশ মুখার্জি
  

      মূলত পুরুলিয়া জেলা হলেও পুরুলিয়া,বাঁকুড়া ও পশ্চিম বর্ধমানের সংযোগবর্তী গ্রাম হল সাঁতুড়ি ব্লকের মোহনপুর গ্রাম।এই গ্রামেই গত প্রায় ২০০ বছর ধরে চলে আসছে সপ্তাহ ব্যাপী (২২-২৮ জানুয়ারী) ঐতিহ্যবাহী মোহনপুর- কেন্দুলী মেলা। গত ২২ শে জানুয়ারী এই মেলার শুভ উদ্বোধন করেন সাঁতুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রীণা লায়েক। উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সত্যরঞ্জন রায়, প্রাক্তন শিক্ষক রামপদ মণ্ডল, ঝুমুর শিল্পী ও পুরাকৃতি গবেষক মাধব চন্দ্র মণ্ডল,কবি সুধাংশু মণ্ডল সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি। অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন রামপদ মণ্ডল এবং পরিচালনা করেন ডা: অপূর্ব মিত্র। গতকাল ছিল এই মেলার শেষ দিন।
       মেলার সাতদিন ধরেই চলে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পুরুলিয়ার বিখ্যাত ছৌ নৃত্য, বীরভূমের দূরদর্শন-খ্যাত বিখ্যাত বাউল শিল্পী স্বপন অধিকারী ও প্রদীপ অধিকারীর বাউল গান, নিত্যানন্দ সেন ও সম্প্রদায়ের পালাকীর্তন, কবিগানের আসর সহ বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থিত শ্রোতাদের মুগ্ধ করে। ছিল ২৪ প্রহর হরিনাম কীর্তন ও  নরনারায়ণ সেবন।
        এছাড়া যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে ২৩ শে জানুয়ারী জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও নেতাজীর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে যেমন নেতাজীর জন্মদিনটি পালন করা হয় তেমনি মর্যাদা সহকারে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ২৬ শে জানুয়ারী প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করা হয়।
     মেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিল সাহিত্য সভা ও কবি সম্মেলন।গত ৩৬ বছর ধরে এটি অনুষ্ঠিত হয়ে চলেছে।স্হানীয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার কবিরা এই আসরে অংশগ্রহণ করেন।এবছর পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর থেকে এসেছিলেন 'কল্পসাগর' পত্রিকার সম্পাদক ভাস্কর আচার্জ্জী, 'আন্তরিক' সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদিকা অন্তরা সিংহরায়, শিল্পী উমাশঙ্কর সেন ও বৈশাখী মুখার্জ্জী। আন্তরিক গোষ্ঠীর গীতি-আলেখ্য 'ভারতবর্ষ সূর্যের এক নাম' ও স্বরচিত কবিতা পাঠ উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে। আন্তরিক সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদিকার হাতে মৃণালকান্তি মিত্র স্মৃতি পুরষ্কার তুলে দেন 'ফোটন' প্রকাশনীর বাসুদেব মণ্ডল। তখন উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত মৃণাল বাবুর সুযোগ্য পুত্র ও মেলা কমিটির অন্যতম সদস্য ডা: অপূর্ব মিত্র। সাহিত্য সভায় স্হানীয় কবিরাও স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন।
    'আন্তরিক' পত্রিকা গোষ্ঠী রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সাহিত্য সভা আয়োজনের সঙ্গে সঙ্গে নিজেরাও অন্যদের আয়োজিত সাহিত্য সভায় উপস্থিত হয়। কিন্তু আয়োজক কমিটির আন্তরিকতায় প্রথম উপস্থিতিতেই তারা মুগ্ধ হন এবং আগামী দিনে আসার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। অন্তরা সিংহরায় বলেন - উদ্যোক্তাদের আন্তরিকতায় আমরা আপ্লুত,মুগ্ধ।
      মেলাকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন লোকসমাগম হয় প্রচুর হলেও হীরালাল সিংহ,অসীম বাউড়ি,অয়ন মিত্র, শুধাংশু মণ্ডল,ডা: অপূর্ব মিত্র প্রমুখদের সুপরিচালনায় মেলাটি সত্যিকারের মিলনস্হল হয়ে ওঠে।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

স্বরুপনগরের ২৬ কিমি সড়কপথ সংস্কার হল

পাথরচাপরির দাতাবাবার টানে....

কোতলপুরে নেতাজির জন্মদিনে আসছেন ব্রাত্য বসু