আইনজীবী প্রহৃত ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ কলকাতা হাইকোর্টের



মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

বুধবার বিকেল সারে চারটেয় কলকাতা হাইকোর্টের চারতলায় ২৩ নং এজলাসে বিচারপতি বিশ্বনাথ সম্মাদার এবং বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় এর ডিভিশন বেঞ্চে হাওড়া কান্ডে রায়দান দেওয়া হয়। এই রায়দানে অনেকগুলি নির্দেশিকা জারী করা হয়েছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের পক্ষে৷ প্রথমত, অবসারপ্রাপ্ত বিচারপতি কল্যাণজ্যোতি সেনগুপ্তের নেতৃত্বে বিচারবিভাগীয় তদন্তাদেশ দেওয়া হয়েছে। একজন সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটির হাতে শাস্তিদানের ক্ষমতাও তুলে দেওয়া হয়েছে। সেইসাথে হাওড়া পুলিশকমিশনার সহ চার আইপিএসের পাশাপাশি তিনজন ইনস্পেকটর পদমর্যাদার সর্বমোট সাতজন পুলিশ অফিসারদের ক্লোজ করা হয়েছে। যারা হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের মধ্যে কোন কাজ করতে পারবেনা। শুধু তাই নয় এই ক্লোজ নির্দেশিকা আগামী ২৬ শে আগস্ট অবধি বহাল থাকছে। উল্লেখ্য এই মামলায় পরবর্তী শুনানির তারিখ এটি৷ গত ২৪ এপ্রিল থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত ১১ টি এফআইআর সহ কলকাতা হাইকোর্টে পেশ হওয়া হলফনামা গুলি পর্য্যালোচনা করবে এই বিচার বিভাগীয় কমিটি। সেদিনে হাওড়া সদর থানার পুলিশ, পুরসভা, কমিশনারেটের কি ভূমিকা ছিল তা সব ক্ষতিয়ে দেখবেন অবসারপ্রাপ্ত বিচারপতি কল্যাণজ্যোতি সেনগুপ্ত। আজ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ সম্মাদার এর ডিভিশন বেঞ্চ সবথেকে গুরত্বপূর্ণ নির্দেশ দেয় যে, রাজ্যের যেকোনো আদালতে পুলিশ বিচারকদের বিনা অনুমতিতে ঢুকতে পারবেনা৷ মহকুমা আদালতে এসিজেম, জেলা আদালতে জেলাজাজ, কলকাতায় সিটি সেশন জাজের অনুমতি নিয়েই পুলিশ ঢুকতে পারবেন। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের আদেশনামাজারির সময় বারবার বিচারপতিরা গত ২৪ এপ্রিল হাওড়া জেলা আদালতে পুলিশের অনুপ্রবেশ নিয়ে বর্বরোচিত আক্রমণ বলে ব্যক্ত করেন৷ এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ সম্মাদার এর ডিভিশন বেঞ্চে রায় শুনতে বেলা তিনটে থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আইনজীবীরা জড়ো হন। অপরদিকে জানা গেছে,  বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল এর চেয়ারম্যান অশোক দেব কে গতকাল মুখ্যমন্ত্রী ফোন করেছিলেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে ২৪ শে মে এর পর বিষয় টি নিয়ে হস্তক্ষেপ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের রায়দান পরবর্তী এক সাক্ষাতকারে আক্রান্ত হাওড়া জেলা আদালতে বার এসোসিয়েশনের পক্ষে জানানো হয় যে, "বার কাউন্সিল কোন রাজনৈতিক শক্তির কাছে মাথা নত করবেনা এটা আশা করি " । উল্লেখ্য বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল এর সিংহভাগ প্রতিনিধিই শাসকদলের আইনজীবী হিসাবে পরিচিত। গত ২৪ এপ্রিল থেকে ২৪ মে অবধি অর্থাৎ পুরো একমাস সময়কালের কর্মবিরতিতে অনেক আইনজীবীই প্রশ্ন তুলেছেন। প্রশ্ন তোলা আইনজীবীদের দাবি - হাওড়া কান্ডে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারতো বার কাউন্সিল। তা না করে দফায় দফায় কর্মবিরতি বাড়িয়ে মহকুমা এবং জেলাস্তরের আইনজীবীদের রুজিরোজগারে ক্ষতি এনেছে। যদিও বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল এর পক্ষে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। সেইসাথে আক্রান্ত আইনজীবীদের সুবিচার পাইয়ে দিতে শেষ অবধি পাশে থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে।                                                                                                                                                                                                               

       

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

স্বরুপনগরের ২৬ কিমি সড়কপথ সংস্কার হল

পাথরচাপরির দাতাবাবার টানে....

কোতলপুরে নেতাজির জন্মদিনে আসছেন ব্রাত্য বসু