পুলিশি সন্ত্রাস মঙ্গলকোটে অব্যাহত

মোল্লা জসিমউদ্দিন,

চলতি লোকসভার চতুর্থ দফার নির্বাচন ইতিমধ্যেই হয়েছে। ভোটপর্ব দুসপ্তাহ কেটে গেলেও হিংসা একফোঁটাও কমেনি। হাতেগোনা কয়েকটি ঘটনা প্রকাশ্যে এলেও চাপা সন্ত্রাস চলছে মঙ্গলকোটের বুকে। অনেকেই পুলিশের কাছে পৌঁছাতে পারছেনা বলে অভিযোগ।  যারা পৌছাছে থানার দোরগোড়ায়, তাদের গুরতর অভিযোগপত্র আবার কম গুরত্বে মামলা রুজু করা হচ্ছে। আবার পাল্টা মামলায় অভিযোগকারীর দলবলের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হচ্ছে জব্ধ করার জন্য।     গত ২৯ এপ্রিল বোলপুর লোকসভার অধীনে মঙ্গলকোট বিধানসভা এলাকায় ভোটপর্ব মিটেছিল। কোথাও ভোটকর্মীদের সাথে সেটিংস  ফিটিংস করে ইভিএমে আতর দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল শাসকদলের বিরুদ্ধে   । আবার কোথাও স্বনির্ভর গ্রুপের মহিলাদের খাবার পরিবেশনের মধ্য দিয়ে মহিলা ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছিল। এইরূপ নানান অভিযোগের মাঝে দুটি ঘটনায় তপ্ত হয়েছিল মঙ্গলকোটের বড় অংশ। একটি হল, ভোটের দিন চাণক এলাকায় বিজেপির বুথ এজেন্ট সহ চারজন কে সশস্ত্র হুমকি ও সেইসাথে মারধর চালানো হয়েছিল তৃনমূল আশ্রিত দুস্কৃতিদের তরফে। এই ঘটনায় হাজার হাজার আদিবাসী সংগঠিত হয়ে দফায় দফায় পথ অবরোধ চালায়। থানার মেজবাবুর মৌখিক প্রতিশ্রুতিতেও অবরোধকারীরা শান্ত হয়নি। অবশেষে লিখিত অভিযোগপত্রে থানার ওসির সাক্ষর আদিবাসীদের রণং দেহী অবস্থান কে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে। তবে আদিবাসীরা তো অত আইন কানুন বোঝেনা। ভোটের দিন হামলার মূল চক্রীদের গ্রেপ্তারের দাবি তোলা হলেও মামলায় দেখা যায় জামিন যোগ্য ধারা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ঘটনাটি হল, সদর মঙ্গলকোটের পুরাতনহাটে বিজেপির পোলিং এজেন্ট হয়েছিল শান্ত ঘোষ। সে দীর্ঘদিন ধরে বিজেপির স্থানীয় নেতা রয়েছে।ভোটের দিন, থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে থাকা   এই বুথে তৃণমূলের সশস্ত্র বাইক বাহিনীর ব্যাপক দৌরাত্ম দেখা যায়। ভোটপর্ব মেটার সাথেসাথেই পেশায় দুগ্ধ ব্যবসায়ীর গরু - ছাগল তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। যাতে আর্থিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়ে। এই ঘটনায় অভিযোগ জানানো হলেও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ সক্রিয় নয় বলে অভিযোগ। যদিও পুলিশের তরফে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। মলকোটের কামালপুরে ভোটের আগের দিন বাইশ টি পরিবার কে ভোট না দেওয়ার ফতোয়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলের বিরুদ্ধে। অনুব্রত মন্ডলের খাস তালুক হিসাবে পরিচিত এই মঙ্গলকোট। যেখানে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীশুন্য ফলাফল এলেও শাসকদলের অন্দরে বিবাদ প্রকাশ্যে আসে। মূলত এই কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজ্যের তিনটি দপ্তরের মন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর সাথে অনুব্রতের লড়াই জমে উঠেছিল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল, যেখানে সিদ্দিকুল্লাহ তাঁর সরকারি নিরাপত্তারক্ষী / গাড়ি ছেড়ে দিয়েছিলেন ক্ষোভে। অভিযোগ, স্থানীয় থানার ওসি কে নিয়ে একের পর এক মিথ্যা মামলায় তাও গাঁজা পাচারের মত নুন্যতম  দুবছর জামিন না পাওয়ার মামলায় একের পর এক বিধায়ক অনুগামীদের ফাসিয়েছিলেন অনুব্রত অনুগামী নেতারা। ঠিক এইরকম পেক্ষাপটে পঞ্চায়েত ভোটের মতনই লোকসভাতেও সেই চাপা সন্ত্রাস চলছে মঙ্গলকোটের বুকে।                                                                                                                                                                            

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

স্বরুপনগরের ২৬ কিমি সড়কপথ সংস্কার হল

পাথরচাপরির দাতাবাবার টানে....

কোতলপুরে নেতাজির জন্মদিনে আসছেন ব্রাত্য বসু