কলকাতা হাইকোর্টে তৃণমূল লিগ্যাল সেলের যুগ্মভাবে দায়িত্ব পেলেন আনসার মন্ডল



 মোল্লা জসিমউদ্দিন  - টিপু, 

গত বুধবার বিকেলে রাজ্য প্রশাসনের প্রধান কার্যালয় 'নবান্ন' তে বার কাউন্সিল এর আইনজীবীদের নিয়ে রুদ্ধশ্বাস বৈঠক সারলেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই সভায় পশ্চিমবঙ্গ বার কাউন্সিলের নির্বাচিত ১৫ জন প্রতিনিধির পাশাপাশি, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক সহ ছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। আসন্ন লোকসভায় সারারাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নির্বাচনী প্রচারে বার কাউন্সিলের আইনজীবীদের নিয়ে সভা করানোর পরিকল্পনার পাশাপাশি এই ১৫ জন আইনজীবীদের দ্রুত দলের সাংগঠনিক পরিকাঠানোয় কোর কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলীয় রাজ্য সভাপতি সুব্রত বকসী কে। ওইদিন বিকেলে কলকাতা হাইকোর্টে তৃনমুল লিগ্যাল সেলের ভূমিকা নিয়ে কার্যত ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন মামলায় রাজ্যসরকার কে বিচারপতিদের সামনে অপদস্ত হতে হচ্ছে। সেজন্য মুখ্যমন্ত্রী প্রাক্তন রাজ্য বার কাউন্সিলের রাজ্য চেয়ারম্যান  তথা কলকাতা হাইকোর্ট এর বর্ষীয়ান আইনজীবী আনসার মন্ডল এবং  আইনজীবী প্রসূন কুমার দত্ত কে দলীয় আইনজীবী সেলের পূর্ণ  দায়িত্ব দিলেন। দায়িত্ব পেয়ে আইনজীবী আনসার মন্ডল জানিয়েছেন - "মুখ্যমন্ত্রীর এহেন নির্দেশে আমরা আরও ভালো কাজ করতে চাই " ।  উল্লেখ্য গত দেড়বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গ বার কাউন্সিলের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে অচলাবস্থা চলছিল। মাস খানেক পূর্বে সুপ্রিম কোর্টের তত্বাবধানে থাকা 'বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া' র তিন সদস্য বিশিষ্ট অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি তাঁদের রায়দানে তৃনমূলপ্রন্থী আইনজীবীদের পক্ষে  নির্বাচন টি বৈধ বলে জানায়। সারা রাজ্যে প্রতিটি জেলায় একজন করে আইনজীবী প্রতিনিধিত্ব করে সর্বমোট পনেরোজন রয়েছেন রাজ্য বার কাউন্সিলে ।এই  সংগঠনের বিজয়ী আইনজীবীদের নিয়ে বুধবার বিকেলে নবান্ন অফিসে বৈঠক সারেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকও ছিলেন। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টপাধ্যায়ের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি জরুরী কাজে ব্যস্ত থাকার জন্য উপস্থিত থাকতে পারেন নি। এই বৈঠকে  মূলত   কলকাতা হাইকোর্টে তৃণমূলের লিগ্যাল সেল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে দুই বর্ষীয়ান আইনজীবী  আনসার মন্ডল এবং প্রসূন কুমার দত্ত কে মুখ্যমন্ত্রী পূর্ন দায়িত্ব দেন। এরপরে আনসার সাহেব  দলের মাদার সংগঠনে কোর কমিটিতে বিজয়ী পনেরো জন বার কাউন্সিলের আইনজীবীদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবনা দেন। সাথে সাথেই মুখ্যমন্ত্রী দলীয় রাজ্য সভাপতি  সুব্রত বকসী কে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন। সেইসাথে আসন্ন লোকসভায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নির্বাচনী প্রচারে সেই জেলার নির্বাচিত বার কাউন্সিলের আইনজীবী কে সভায় থাকবার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।কলকাতা হাইকোর্টে তৃণমূলের লিগ্যাল সেলের দায়িত্ব পাওয়া তথা গত ২০০১ এবং ২০০৬ সালে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের তৃনমূল প্রতীকে লড়াই করা   আনসার মন্ডল জানান - "মুখ্যমন্ত্রী আমাদের যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তা আমরা সফল করার চেস্টা রাখব " । বুধবার বিকেলে রাজ্য প্রশাসনের প্রধান কার্যালয়ে হওয়া বৈঠকে বিভিন্ন জেলা ও মহকুমা আদালতের পরিকাঠামো সহ আইনজীবীদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে - আসন্ন লোকসভা নির্বাচন এইপ্রকার কঠিন মনে করেই মুখ্যমন্ত্রী বার কাউন্সিলের আইনজীবীদের শরণাপন্ন হলেন। আইনী ঝামেলা এড়াতে আইনজীবীদের গুরত্ব অনুভব করে   দলের কোর কমিটিতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। একাধারে বিভিন্ন আদালতে যেমন তারা সরকারপক্ষে সক্রিয় থাকবেন, ঠিক তেমনি দলের সাংগঠনিক ভিক্তিকে আরও মজবুত করবেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন - এত আইনজীবি একসাথে দলের কোর কমিটিতে আগে কখনো স্থান পাইনি। এবার লোকসভার প্রাক্কালে তা ঘটতে চলেছে । অর্থাৎ এই রাজ্যের শাসক দল তাদের আইনী সেল কে শক্তিশালী করলো বিপক্ষে বিরোধী দলের কথা ভেবেই।যা লোকসভা নির্বাচনে লড়াই কে সামনে রেখেই।                                                                                                                                                                                                                             

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

স্বরুপনগরের ২৬ কিমি সড়কপথ সংস্কার হল

পাথরচাপরির দাতাবাবার টানে....

কোতলপুরে নেতাজির জন্মদিনে আসছেন ব্রাত্য বসু