দলের মন্ত্রীদের সভায় না পেয়ে জমিয়ত সভা মেগা হিট বানালেন সিদ্দিকুল্লাহ


মোল্লা জসিমউদ্দিন, 


ঘটনা ১,  গত ৩০ নভেম্বর পূর্ব বর্ধমানের কালনায় জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী এসেছিলেন। সেখানে দুই বর্ধমানের সব মন্ত্রী,  সাংসদ সহ অধিকাংশ বিধায়কগন হাজির। মঞ্চে নেই শুধু মঙ্গলকোট বিধায়ক তথা জেলার অন্যতম মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী।     ঘটনা ২,  আগামী ১৯ জানুয়ারী ব্রিগেডের সমাবেশ উপলক্ষে ব্লকে ব্লকে প্রস্তুতির জনসভা চলছে। গত ২ ডিসেম্বর মঙ্গলকোট থানার সামনে তৃনমূলের জনসভায় অনুব্রত মন্ডল তার জেলার বিধায়ক তথা মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ কে নিয়ে বিশাল সভা সারলেন। সেখানেও নেই স্থানীয় বিধায়ক সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। অথচ আগামী ১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলকোটের নুতনহাট বিএড কলেজের সামনের মাঠে জেলা গ্রন্থাগার মেলার প্রস্তুতি নিয়ে এখনও অবধি চার চারটি বৈঠক মঙ্গলকোটে করে গেছেন গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ। জেলা গ্রন্থাগার মেলা নিয়ে এত প্রস্তুতি  বৈঠক আগে কোথাও হয়েছে কিনা,  তা প্রশাসনের আধিকারিকরাও জানেন না! ঘটনা পরম্পরা দেখে বোঝা যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী জেলায় জনসভা করে যাচ্ছেন,  সেখানে গড়হাজির জেলারই মন্ত্রী। আবার ব্রিগেড নিয়ে সভা হচ্ছে সেখানেও ব্রাত সিদ্দিকুল্লাহ। তবে আসাম রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাংসদ শতাব্দী রায়ের সাথে দলীয় সভা করতে দেখা গেছে সিদ্দিকুল্লাহ কে। তাহলে বঙ্গ রাজনীতিতে তৃনমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্দিকুল্লাহ কে পাত্তা দিচ্ছে না কেন সিদ্দিকুল্লাহ কে ?  এই প্রশ্ন উঠাটা স্বাভাবিক। তবে গত একবছর ধরে যেভাবে সিদ্দিকুল্লাহ তৃনমূলের অন্দরে কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন। তাতে তিনিও পরিস্থিতির সন্ধানে আছেন চাতক পাখির মত। এই প্রতিবেদক সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী কে প্রশ্ন করেছিলেন - "গত বছর (পঞ্চায়েত ভোটে) জেলা গ্রন্থাগার মেলা হলনা মঙ্গলকোটে,  এবছর ( লোকসভা ভোট)  মঙ্গলকোটে জেলা গ্রন্থাগার মেলা   হচ্ছে। তাহলে কি সিদ্দিকুল্লাহ কে খুব দরকার(মুসলিম ভোট) তৃনমূলের?"   এই প্রশ্ন শুনে হেসে তিনি বলেছিলেন " অপেক্ষা করো এবং দেখে যাও...." অনেক অব্যক্ত বক্তব্য লুকিয়ে রয়েছে এর মধ্যে। ঘনিষ্ঠমহলে তিনি নাকি বলেছেন - পঞ্চায়েতের ঋণ তিনি লোকসভায় সূদ আসল তুলবেন। যেভাবে মঙ্গলকোটের স্থানীয় রাজনীতিতে 'শুন্য' করে রাখা হয়েছে, তার জবাব তিনি দেবেন। অফিস ঘরের সামনে বোমাবাজি,  অনুগামীদের গাঁজার মামলায় ফাসিয়ে দেওয়া সর্বপরি পঞ্চায়েত ভোটে আসনরফার যে 'নাটক' করা হয়েছে তার প্রতি। সেই নাটকের চিত্রনাট্যকারদের উপযুক্ত জবাব    আসন্ন লোকসভায় দেবেন। বাংলায় ত্রিশভাগ মুসলিম ভোট নিয়ে তৃনমূল যেমন দুশ্চিন্তায় ঠিক তেমনি বিজেপি মুকুল রায়ের মাধ্যমে ভাগ বসাতে অত্যন্ত তৎপর। গত ৪ ডিসেম্বর কলকাতায় জমিয়ত উলেমা হিন্দের বার্ষিক প্রকাশ্য সভা ছিল। ঠিক তেমনি আজ অর্থাৎ ৬ ডিসেম্বর বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের সভাও ছিল। এই দুই সভায় ভীড় সমাগমে বিপুলভাবে এগিয়ে ৪ ডিসেম্বরের   সিদ্দিকুল্লাহের জমিয়ত উলেমা হিন্দ।  সেখানে ৬ ডিসেম্বর এর অন্য সংগঠনগুলির সভায় ভীড় নেই বললেই চলে। গত বছর সিদ্দিকুল্লাহের সভায় তৃনমূল নেত্রী রাজ্যের তিন মন্ত্রীদের পাঠিয়ে ছিলেন। এবছর কেউ আসেননি মন্ত্রীসভার তরফে। অর্থাৎ গত বছরের জমিয়তের ভীড়ে তৃনমূলপন্থী  মুসলিমদের সমাগম ছিল। সেটা এবারে নেই। তাই সাংগঠনিকভাবে একক প্রয়াসে সিদ্দিকুল্লাহ একশো শতাংকস সফল। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ৪২ টি আসনের মধ্যে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন একতৃতীয়াংশ অর্থ্যাৎ ১৪ টি মুসলিম মুখ রাখার দাবিতে নিয়মিত সভা চালিয়ে যাচ্ছে। সেখানে গত ২০১৬ এর বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র ২ টি আসনের সমঝোতা আর করবেন না সিদ্দিকুল্লাহ। ঘনিষ্ঠমহলে তিনি নাকি বলেছেন ১৪ টি না হোক ৩ থেকে ৪ টি আসন লোকসভায় লাগবেই। গত ৪ ডিসেম্বর লাখো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভীড় কলকাতায় এনে আরও উজ্জীবিত তৃনমূলের অন্দরে ঘাত প্রতিঘাতে থাকা সিদ্দিকুল্লাহ।                                                                                                           

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

স্বরুপনগরের ২৬ কিমি সড়কপথ সংস্কার হল

পাথরচাপরির দাতাবাবার টানে....

কোতলপুরে নেতাজির জন্মদিনে আসছেন ব্রাত্য বসু