সিদ্দিকুল্লাহ কে বিধায়ক পদে কেন আনলো তৃনমূল ? শারদীয়ায় বস্ত্রবিলিতে উঠছে প্রশ্ন


মোল্লা জসিমউদ্দিন,

আজ থেকে দুবছর আগে মঙ্গলকোটের নুতনহাট কৃষান মান্ডি চত্বরে শারদীয়া উপলক্ষে বিধায়ক কোটায় বস্ত্রবিলি চালিয়ে ছিলেন এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী  সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। তখন তাঁর পাশে দেখা গিয়েছিল ব্লক তৃনমূল সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী সহ মঙ্গলকোট পঞ্চায়েত সমিতির সমস্ত পদাধিকারীদের কে। এই দুছরে অজয় - কুনুর দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল। স্থানীয় ক্ষমতার দখল বেদখল নিয়ে মঙ্গলকোটের দুই যুযুধান শিবিরের সৌজন্যে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে মঙ্গলকোট। ব্লক তৃণমূল শিবিরের নিহত ডালিম সেখ খুনে নাম জড়িয়েছে বিধায়কের ভাইয়ের নাম। যদিও এই মামলার তদন্তকারী সিআইডি বিধায়কের ভাই নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য করেনি। তবে বিদায়ী জেলাপরিষদের বিধায়ক অনুগামী সদস্য বিকাশ চৌধুরী এখনও জেলে বন্দি। ব্লক তৃনমূলের ক্ষমতাসীন গ্রুপের একাংশের দাবি,  "মুসলিম সংগঠনের সর্বভারতীয় নেতা না হলে বিধায়ক কেও এই খুনের মামলায় জেল খাটতে হত। " ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে মঙ্গলকোটে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী যে নিজস্ব অফিস  নুতনহাট বাইপাসে পদিমপুর মোড়ে করে ছিলেন। ঘর মালিক সেই অফিসও বন্ধ করে দিয়েছেন রাজ্যের একজন মন্ত্রীর জন্য! গত দেড় বছরে মঙ্গলকোট থানার এককিমির মধ্যে থাকা এই অফিসে তিন থেকে চারবার সশস্ত্র হামলা চালাবার অভিযোগ উঠেছিল ব্লক তৃনমূলের আশ্রিত দুস্কৃতিদের বিরুদ্ধে। বোমাবাজি থেকে মারধর সবকিছু হয়েছিলো। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তিদের নামে মিথ্যা   পুলিশি মামলাও রুজু হয় সেসময়। এইবিধ নানান ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে কিংবা দলের একাংশের বিরুদ্ধে সিদ্দিকুল্লাহ সেভাবে সরব না হওয়ায় ঘরমালিক অফিস করতে ঘরভাড়া দিতে অনিচ্ছুক হন বলে স্থানীয় সুত্রে প্রকাশ। তবে অজয় নদের বালিঘাট নিয়ে পুলিশ ও দলীয় নেতাদের একাংশের অশুভ আঁতাতের অভিযোগ বারবার শোনা গিয়েছিল রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রীর গলায়। পুলিশের বিরুদ্ধে এহেন সরব হওয়ার পরিণতির ফলস্বরূপ অনুগামীদের গাঁজা সহ অস্ত্র মামলায় মঙ্গলকোট পুলিশ অতি সক্রিয়তা দেখিয়েছে বলে দাবি। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে যতদিন এগিয়েছে, ঠিক ততটাই ক্রমশ কোনঠাসা হয়েছেন মঙ্গলকোট বিধায়ক। থানা, পঞ্চায়েত  সমিতি,  ব্লক প্রশাসনে নুন্যতম পাত্তা পাননা বলে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিদ্দিকুল্লাহ। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছে বৃহত উৎসব ঈদে যখন রাজ্যের শাসকদলের বিধায়করা বস্ত্রবিলিতে জনসংযোগ বাড়িয়েছেন। তখন মঙ্গলকোট বিধায়কের অনুপস্থিতি দেখা গেছে মঙ্গলকোটে। যেহেতু তিনি গ্রন্থাগার মন্ত্রী, তাই মঙ্গলকোটের নুতনহাট মিলন পাঠাগারে তাঁর কোটায় বস্ত্রবিলি করা হয়েছিল ফ্লেক্স দেখিয়ে। ঈদের মতন অনুরুপ ছবি দেখা গেলো এবার শারদীয়াতেও। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে হাতে গোনা কয়েকজন পাঠাগার কর্মীর পরিচালনায় বিধায়কের বস্ত্রবিলি কর্মসূচি পালিত হলো!   রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহের শেষ ঠিকানা বলতে মঙ্গলকোটের নুতনহাট মিলন পাঠাগার। আর কোথাও তিনি 'জায়গা' পাচ্ছেন না মঙ্গলকোটে। গতবছর জেলা গ্রন্থাগার মেলা করার সমস্ত প্রয়াস নিয়েছিলেন তাঁর নির্বাচনী ক্ষেত্র মঙ্গলকোটের জন্য। কিন্তু সেবার প্রশাসনের একাংশের রিপোর্টে হয়নি। গ্রন্থাগারমেলা টি হয়েছিল মন্তেশ্বরে। এবারেও চেস্টা চালাচ্ছেন মঙ্গলকোটের মধ্যে করানোর। তবে এবারেও না হওয়ার সমস্ত সম্ভাবনা তৈরি করছে বিধায়কের বিপক্ষে থাকা  ব্লক তৃনমূলের  ক্ষমতাসীন গ্রুপের নেতারা। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে ব্লক তৃণমূলের নেতারা। এলাকাবাসীদের প্রশ্ন,  যদি ঈদে / শারদীয়ায় বস্ত্রবিলিতে বিধায়ক না আসেন, তাহলে কেন তৃনমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী কে মঙ্গলকোটের বিধায়ক পদে আনলো?                                                                                                                

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

স্বরুপনগরের ২৬ কিমি সড়কপথ সংস্কার হল

পাথরচাপরির দাতাবাবার টানে....

কোতলপুরে নেতাজির জন্মদিনে আসছেন ব্রাত্য বসু