শাসক শিবিরে ভাঙ্গন ধরিয়ে শক্তিবৃদ্ধি পূর্ব বর্ধমান বিজেপির



মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদানের আগে পূর্ব বর্ধমান জেলায় কালনা মহকুমার বেশকিছু অঞ্চল ছাড়া গেরুয়া শিবিরের অস্তিত্ব ছিলনা।  চারিদিকে দলবদলের হিড়িক শাসকদলের দিকে ভীড়লেও,  পূর্ব বর্ধমান জেলায় ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে গেরুয়া  শিবির। ইতিমধ্যেই জেলাপরিষদের কর্মাধ্যক্ষ গোলাম জার্জিস সহ আরেকজন সদস্য রুবি ধীবর বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন। সাংগঠনিকস্তরে দুজন নেতা অশোক মালাকার, শিবনাথ সিং এসেছেন। এছাড়া তৃনমূলের প্রতীকে মঙ্গলকোটে একদা লড়াকু প্রার্থী চন্দ্রনাথ মুখার্জি  এসেছেন পূর্ব বর্ধমানের গেরুয়া বলয়ে। আরও জানা যাচ্ছে, রাজ্যের পালাবদলের আগে ২০১০ সালে বামদূর্গ চুরমার করে দেওয়া তৃনমূল নেতা এবং সেসময়কার গুসকারা পুরচেয়ারম্যান চঞ্চল গড়াই যোগ দিতে চলেছেন বিজেপিতে। ইতিমধ্যেই তাঁর মেয়ে গতমাসে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপির পতাকা ধরেছেন। আগামী  গুসকারা পুরভোটের     আগেই    চঞ্চল গড়াই   সদলবলে আসবেন বলে প্রকাশ। কেননা তিনি রাজ্যের এক বড় নেতার    সৌজন্যে  দলের অন্দরে  গুরত্বহীন এবং মিথ্যা পুলিশ কেসে জেল খেটেছেন বলে অভিযোগ। শুধু চঞ্চল গড়াই নয় জেলাপরিষদের আরেক বিদায়ী সদস্য তথা বামজামানায় মঙ্গলকোটের তৃনমূলের আরেক মুখ বিকাশ চৌধুরীও বিজেপিতে নাম লেখাতে পারেন। বর্তমানে তিনি দলীয় কর্মী ডালিম সেখ খুনে বিচারধীন বন্দি।তাঁর এহেন পরিণতিতে দলের ক্ষমতাসীন গ্রুপ দায়ী বলে অনুগামীদের জানিয়েছেন। একদা সিপিএম নেতা ফাল্গুনী মুখার্জি খুনে মূল অভিযুক্ত হলেও সেসময় তৃনমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব কে এই বিকাশ চৌধুরীর নিরপরাধ প্রমাণে থানার সামনে সহ মঙ্গলকোটের বিভিন্ন জায়গায় সভা করতে দেখা গেছে।      রায়নার বামাপদ মন্ডল, কাটোয়ার পুর কাউন্সিলর জঙ্গল সেখ সহ মন্তেশ্বর পূর্বস্থলীর অনেক আদি তৃনমূল নেতাদের দলবদলে গেরুয়া শিবিরে দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। যদিও জেলা তৃনমূল নেতৃত্ব এদের দলবদলে চিন্তিত নয় বলে দাবি করেছে। তবে গোলাম জার্জিস, রুবি ধীবর, অশোক মালাকার, শিবু সিং, চন্দ্রনাথ মুখার্জি, যারা ইতিমধ্যে তৃনমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন। কিংবা চঞ্চল গড়াই, বামাপদ মন্ডল, জঙ্গল সেখ প্রমুখরা বিজেপির দিকে পা বাড়িয়ে রয়েছে।এইবিধ একদা তৃনমূলের আদি নেতারা দলে দলে গেরুয়া শিবিরে যাওয়াতে তৃনমূলের ক্ষতি হচ্ছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন জেলা রাজনীতিবিদরা। বাম জামানায় যাদের উপর ভর করে জেলায় সাফল্য পেয়েছিল তৃনমূল, তাদের প্রত্যেকেরই স্বক্ষেত্রে নিজস্ব ব্যাপ্তি রয়েছে।উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়,  রাজ্যে ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে তৃনমূলের একক দখলে আসা গুসকারা পুরসভার কান্ডারী চঞ্চল গড়াই বামবিরোধীদের কাজে রোলমডেল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। সেসময় বিধানসভার নির্বাচনী প্রচারে অবিভক্ত বর্ধমান সহ বীরভূম জেলার সভাগুলিতে দলনেত্রীর পাশে দেখা যেত। এইরুপ ব্যক্তি দলের অন্দরে কোনঠাসা হয়ে পুলিশি ঝামেলায় পড়ে দলত্যাগ করলে তার রেশ সেই এলাকাগুলিতে কমবেশি পড়বেই। এইরুপ দাবি রাজনীতি মহলে। একদা নড়বড়ে সংগঠন   হিসাবে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ছিল বিজেপি। সেখানে জেলাপরিষদের বিদায়ী সদস্যদের  , সেইসাথে তৃনমূলের প্রতীকে বিধানসভায় দাড়ানো, ব্লকস্তরের নেতা, শ্রমিক সংগঠনের জেলা নেতাদের পেয়ে উজ্জীবিত পূর্ব বর্ধমানের গেরুয়া শিবির। জানা গেছে এরা প্রত্যেকেই মুকুল রায়ের অনুগামী। সম্প্রতি জাতীয় স্তরে মুকুল রায় পদ পাওয়ায় আর অনেকে এদের মধ্যে একদা পুরপিতা সহ বেশ প্রাত্তন বিধায়ক পুজোর আগেই তৃনমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন।                                                

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

স্বরুপনগরের ২৬ কিমি সড়কপথ সংস্কার হল

পাথরচাপরির দাতাবাবার টানে....

কোতলপুরে নেতাজির জন্মদিনে আসছেন ব্রাত্য বসু