কাটোয়া পুরসভার জলকরের দেনা আড়াই কোটি



পারিজাত মোল্লা




হাজার কিংবা লক্ষ টাকা নয়, কয়েক কোটি দেনার নোটিশ এসেছে কাটোয়া পুরসভায়।দিন পনেরো আগে কেন্দ্রীয় সরকারের এই আর্থিক নোটিস রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে কাটোয়া পুরকর্তাদের।এই বিপুল আর্থিক রাশি পরিশোধ না করলে প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়ার হুশিয়ারী রয়েছে তাতে।তাই এক লক্ষের কাছাকাছি শহরবাসীর কাছে পানীয়জল সরবরাহ করা নিয়ে ভবিষ্যতে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।গত চারবছরে ভাগীরথী নদের জলশোধন প্রকল্পে কাটোয়া পুরসভার দেনা আড়াইকোটি! এই অর্থ না মেটালে প্রকল্পটি স্থগিত করে দিতে পারে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ পোর্ট ট্রাস্ট সংস্থা।এই মর্মে লিখিত চিঠি দিন পনেরো আগে এসেছে পুরসভার কাছে।প্রকল্প বন্ধ হলে কাটোয়া পুরসভার কুড়িটি ওয়ার্ডে একাশি হাজার শহরবাসী চরম পানীয়জল সংকটে পড়বেন। বর্তমানে দিনে চারবার এক কোটি কুড়ি লক্ষ লিটার জল সরবরাহ করা হয় এই প্রকল্প থেকেই।তবে সাময়িক স্বস্তি অবশ্য রয়েছে পোর্ট ট্রাস্টের নিদিষ্ট সময়সীমা না দেওয়ার জন্য।কাটোয়া মহকুমাশাসক সৌমেন পাল বিষয়টি নিয়ে দ্রুত পোর্ট ট্রাস্টের আধিকারিকদের সাথে আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছেন। পূর্ব বর্ধমান জেলায় ভূগভর্স্ত পানীয়জল অত্যাধিক শোষন করার জন্য আর্সেনিকের প্রকোপের পাশাপাশি ভূগর্ভস্ত জলস্তর বিপদজনক ভাবে উঠে আসছে।কাটোয়া ঘেঁষা পূর্বস্থলী, মঙ্গলকোট এবং কেতুগ্রামের বেশকিছু এলাকায় আর্সেনিকের প্রভাব রয়েছে।তাই কেন্দ্রীয় সরকার এই সংকট মেটাতে জেলায় জেলায় নদীর জলশোধন প্রকল্প কর্মসূচী চালাচ্ছে।কালনার পাশাপাশি কাটোয়াতেও রাজ্যসরকার কে নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের এহেন প্রকল্প রয়েছে।২০১৪ সালে আগস্ট মাসে আটাশ কোটি অনুদানে কাটোয়া শহরের ভাগীরথীর উপকূলে এই প্রকল্প হয়।চারটি ওভারহেড এবং তিনটি আন্ডারগ্রাউন্ড জলাধার নিয়ে প্রকল্পটি চলতে থাকে।পোর্ট ট্রাস্ট একহাজার গ্যালনে নদীর জল কে পানীয়জল করবার খরচ হিসাবে আড়াই টাকা ধার্য করে।২০১৪ সালের কুড়িই আগস্ট থেকে ২০১৮ এর একত্রিশে মার্চ পর্যন্ত হিসাবখাতায় উঠেছে আড়াই কোটির কিছু বেশি দেনা।পুরসভা অবশ্য এই প্রকল্পে অগ্রিম দশ লক্ষ টাকা দিয়েছিল।এই বিপুল দেনা শোধবোধ করার ক্ষমতা পুরসভার নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক তথা পুর চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে পুরসভার অন্দরে আইনজীবিদের সাথে আইনীভাবে লড়বার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।কাটোয়া মহকুমা আদালতের বর্ষীয়ান আইনজীবী ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন কাটোয়া পুরসভার আইনি উপদেস্টা রুপে।এখন পোর্ট ট্রাস্ট এই প্রকল্পে দেনা নিয়ে জলশোধন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিলে একলক্ষের কাছাকাছি পুরবাসী চরম জলসংকটে পড়বেন, এটা আশংকা করা হচ্ছে।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

স্বরুপনগরের ২৬ কিমি সড়কপথ সংস্কার হল

পাথরচাপরির দাতাবাবার টানে....

কোতলপুরে নেতাজির জন্মদিনে আসছেন ব্রাত্য বসু